গাদিয়াড়ায় বর্ষবিদায়
সম্রাজ্ঞী কোনার
পর্ব ১
বছরের এই সময়টায় কোথাও যাওয়ার মজাই আলাদা । সারাবছর কঞ্জুসের মত খরচা করে জমে থাকা সিএল জমিদারের মত খরচা করার সময় এটা ।
সারা পৃথিবী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ছুটিতে মেতে ওঠে । আমরাই বা বাদ যাই কেন ।
বাড়ির পাশ থেকে রোজ গাড়ি ছাড়ে । আমরাও সকালে উঠে পড়লাম তিনজনে । মাঝে এক জায়গায় চা খাওয়ার স্টপ দিয়ে গাড়ি পৌঁছে দিল আড়াই ঘন্টায় । নদীর ধারে দোকানে থরে থরে মাছ ভাজা রাখা আমাদেরই অপেক্ষায় ।
গরম চা ও নদীর টাটকা গরমাগরম মাছভাজা দিয়ে প্রাতরাশ সেরে জমিদারিচালে সওয়ারী হলাম সাইকেল ভ্যানে । ভ্যানচালক গল্প করতে করতে বাসস্ট্যান্ড থেকে নদীর ধারের রাস্তা ধরে আমাদের নিয়ে চললেন জেটিঘাটের দিকে।
বাসস্ট্যান্ডের কাছে বেশ কিছু হোটেল , দোকানপাট থাকলেও এখানকার প্রধান লজ , বলতে গেলে যাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি , জেটি পেরিয়ে , লাইটহাউস পার করেও একটু দূরে নদীকিনারে অবস্থিত ।
এতক্ষণে কি কেউ চিনতে পারছো জায়গাটাকে ?
এটা কলকাতার খুব কাছে সেই বিখ্যাত পর্যটনস্থল যেখানে তিনটি নদী একসাথে মিশেছে। যার উল্টোদিকে অবস্থিত নূরপূর ও গেঁওখালিও এখন পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে ।
নদীর ধারধরে চলা রাস্তা গাছগাছালির ছায়ায় ঢাকা । পিচরাস্তা একসময়ে শেষ হয়ে শুরু হয় লালমোরাম বিছানো রাস্তা । আমার গলায় ঝোলানো ভারী ডিএসএলআর ক্যামেরাটা চোখে তুলে ক্লিক করলে শাটার পড়ে না । তাকিয়ে দেখি ক্যামেরা তো অন ই হচ্ছে না ! মনে পড়ে গেল , কাল রাত্রে চার্জে বসিয়ে সকালে ব্যাটারীটা ক্যামছরায় ভরতেই ভূলে গেছি
এইসেই স্বখ্যাত রূপনারায়ণ টুরিস্ট লজ , যা নিজেই একটি পর্যটনকেন্দ্র বলা যায় ।
গাদিয়াড়া । জায়গাটার নাম প্রথম শুনেছিলাম আগের শতাব্দীর নব্বই এর দশকে , বাবার মুখে । অফিসের কাজে গিয়ে হাওড়ার এই জায়গাটা বাবার অপূর্ব লেগেছিল । তিনদিকে নদী ঘেরা গাদিয়াড়ার রূপ নাকি বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি খোলে । বাবা বহুবার বলেছে সবাই মিলে এখানে বেড়াতে আসার জন্য । এতদিনে তা সম্ভব হল , বর্ষায় নয় , শীতে হল । তবু শীতেও গাদিয়াড়ার রূপ যা দেখলাম ভোলার নয় ।
ধর্মতলা থেকে ঘন্টায় ঘন্টায় গাদিয়াড়া যাওয়ার CTC এর বাস ছাড়ছে । এছাড়া রবীন্দ্রসদন থেকে দ্বিতীয় হুগলী সেতু হয়ে ও ডানলপ থেকে নিবেদিতা সেতু হয়ে বাস যায় । NH6 ধরে এগোতে উলুবেড়িয়া হয়ে আটান্ন গেট হয়ে গাদিয়াড়া যাওয়া যায় অথবা বাগনান হয়ে যাওয়া যায় । কলকাতা থেকে উলুবেড়িয়া হয়ে যাওয়ার পথটা অপেক্ষাকৃত ছোট ।
রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজ পার করে লাইটহাউস পার করে মোরাম রাস্তা ধরে আমাদের ভ্যান পৌঁছালো আশ্রমে ।
গঙ্গার ধারে নিরিবিলি পরিবেশে গঙ্গা আশ্রম ।
আশ্রমের মধ্যে থেকে নীরবে উনারা জনসেবা করে যাচ্ছেন । নির্দিষ্ট দিনে বিভিন্ন শাখার ডাক্তার বসেন , বিনামূল্যে ওষুধ দেন গ্রামবাসীদের ।
বেড়াতে আসা মানুষজনের অল্প কয়েকজন আসেন আশ্রম দর্শনে । যারা আসেন তাদের মনটা অপার শান্তিতে ভরে যায় ।
আঙ্গিনার ফাঁকা জমিতে প্রচূর তরিতরকারি চাষ করা । অরগ্যানিক ফার্মিং নিজের চোখে দেখা হল ।
নদীর তীরে ও গাছগাছালি ঢাকা জমিতে চলছে পিকনিক পার্টীর উল্লাস , তবে তা কর্ণকূহর বিদারক নয় । বরং এত শান্ত প্রকৃতির মাঝে জীবনের শব্দ ভালোই লাগে ।
আশ্রম থেকে লজের দিকে যেতে চোখে পড়ে সুবিশাল লাইটহাউসটি । একসময়ে নূরপুরের দিক থেকে জাহাজ গুলিকে আলো দেখাতো এই লাইটহাউস ।
লজের কাছে ফিরে এসে ভ্যান ছেড়ে দিয়েছিলাম । হোল ফ্যামিলী কিছুক্ষণ নদীর শোভা দেখার জন্য তীরের বেঞ্চে বসলাম ।
পরে চায়ের দোকানে বসে চা খেলাম নদীতে জোয়ার ভাঁটার খেলা দেখতে দেখতে । আমাদের চোখের সামনে ভাঁটা এসে জলে ডুবে থাকা ফোর্টের ধ্বংসাবশেষ জেগে উঠলো ।
ডায়মন্ড হারবারের চিংড়িখালি ফোর্টের ধ্বংসাবশেষের মত গাদিয়াড়ার ফোর্টের ধ্বংসাবশেষও নদীর গ্রাসে ।
পর্ব - ২
রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজের ক্যাম্পাসটি সত্যিই দেখার মত ।পুরনো স্থাপত্যের ছোঁওয়া যেমন আছে , তেমনি আছে নতুন লজ বিল্ডিং । বিস্তীর্ণ সাজানো বাগানে আনাচে কানাচে ট্যুরিস্টপার্টী পিকনিকে ব্যাস্ত ।
কনফারেন্স হল , ক্যাফেটেরিয়া , চিল্ড্রেন্স পার্ক , কর্মচারীদের আবাস বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ।
লাইটহাউসের দিকে যে জলাশয় আছে সেখানে গিয়ে হঠাৎ দর্শন পেলাম এক বিশালাকার মনিটর লিজার্ড বা গোসাপের । ক্যামেরা চালু না থাকার দুঃখ পেলাম বেশ ।
পুকুর পার করে গোসাপ খাবারের খোঁজে ঘোরাঘুরি করছিল । আমাদের সে এক্সপেক্ট করেনি ।
অন্যদিকে পুরনো বটগাছের নীচে কৃত্রিম জলাশয় , পাখি ও ফুল দিয়ে সাজানো পার্কের বেঞ্চে বসে কিছু স্ন্যাক্স দিয়ে টিফিন সারি ।
পাখিগুলোর পোস্চার ও সারাউন্ডিংস্ এতই ন্যাচারাল যে বার বার ওদের জীবন্ত বলে ভূল হয় ।
বাসস্ট্যান্ডের যে হোটেলে মাছভাজা খেয়েছিলাম তাকে ফোন করে বলে রেখেছিলাম বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ তিনটে চিকেন মিল রেডি রাখতে । লজ থেকে ভ্যানে চড়ে ফিরতি পথে দুবার থামতে হল ।
আমরা যখনই কোনো ওয়াটার বডির ধারে বেড়াতে যাই , ওখানকার ডাব খেতে ভুলি না। যেমন গঙ্গাসাগর , ডায়মন্ড হারবার , দীঘা , মন্দারমনি , তাজপুর , চাঁদপুরের মতই গাদিয়াড়ার ডাবও অত্যন্ত উপাদেয় , মিস্টি , বৃহদাকার ও তুলনামূলকভাবে দামে অনেক সস্তা । গাদিয়াড়ার ডাবটা আমি খেয়ে শেষ করতে পারছিলাম না । গাদিয়াড়াতেই আমরা প্রথম একজন মহিলা ডাববিক্রেতা দেখলাম যে নিজে হাতে ডাব বাছা , ছাড়ানো , কাটা , ক্রেতাকে সার্ভ করা সব কিছুই করছিল । মেয়েরা যে কোনো পেশাতেই আজ আর পিছপা নয় তার প্রমাণ আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের চারপাশে পেয়েই যাচ্ছি ।
গোটা রাস্তাটা খেজুর রস ও গুড়ের গন্ধে ম ম করছিলো । ক'দিন আগে ডায়মন্ড হারবার থেকে নিয়ছি তাই আর নেওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও গন্ধে মাতোয়ারা একজায়গায় ভ্যান থেকে নেমেই পরলাম যেখানে বৃদ্ধমানুষটি নলেন গুড় বানাচ্ছিলেন । গুড়ের স্মেল , ভিস্কোসিটী এবং স্রষ্টার অহংকার বুঝিয়ে দিচ্ছিল এ গুড় অতি উন্নত মানের । গাদিয়াড়ার মাটি নোনা না হওয়ায় গুড়ের স্বাদ উৎকৃষ্ট হয় ডায়মন্ড হারবারের তুলনায় ।
বাসস্ট্যান্ডের ছোট্ট হোটেলটিতে বসে নৌকার আনাগোনা দেখতে দেখতে খুবই সুস্বাদু চিকেন মিল খেলাম । হোটেলের দাদা রান্না করছিলেন আর বৌদি পরিবেশন করছিলেন এত সুন্দর করে যেমন করে আমরা বাড়িতে বহুদিন পরে কোনো আপনজন একদিনের জন্য এলে তাকে একটা একটা করে পদ পরিবেশন করে সামনে বসিয়ে খাওয়াই ।
শান্ত নদীটার ধারে বসে সময় কাটছিল ধীরে । আমাদেরও কোনো তাড়া ছিল না ।
বাসস্ট্যান্ডে আমরা পৌঁছেই গেছিলাম । যে বাসে ইচ্ছা সে বাসে উঠে চলে গেলেই হত । কিন্তু আমরা হাঁটতে বেরোলাম ।
শুনেছিলাম গাদিয়াড়ার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত মনে রাখার মত । তাকেই পরখ করতে বেরোলাম ।
তখনো কি জানতাম সূর্যাস্তের নামে এমন সুন্দর কতকগুলো পিকচার পোস্টকার্ড অপেক্ষা করছে আমার জন্য !
আমি একটু একটু হাঁটছিলাম , আর আকাশ একটা একটা রং ছড়াচ্ছিল ।
আর নদী অন্য অন্য তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সেই রঙের প্রতিসরণ ঘটাচ্ছিল ।
তীর সেই রঙের শোষণ করেছে , বিচ্ছুরণ করেছে ।
নৌকা একটা একটা রং হারিয়ে খুঁজে চলেছে ।
বাসস্ট্যান্ড থেকে যেদিকে ট্যুরিস্ট লজ তার উল্টোদিকের রাস্তাটা বিশাল মহীরূহসারিতে ঢাকা । সেই মহীরূহ শাখের সবুজ আঁধারি , পরন্ত সূর্যের সোনালী আলো , গলন্ত নদীর নীল , মোরাম রাস্তার লাল রং , এক অনন্যসাধারণ সূর্যাস্তের নাটিকা নামায় ।
যে নাটিকায় জীবিত ও জড়ের বিমূর্ত ব্যঞ্জনা আছে ।
বিরাট শিল্পীর ক্যানভাসে টানা তুলির আঁকিবুঁকি আছে ।eরঙের প্রলেপ আছে ।
যে নাটিকায় থ্রি ইডিয়টস্ ও আছে ।
রূপনারায়ণের তীরে মহাদেব একাকী ধ্যান মগ্ন ।
তর্ক অযোগ্যভাবে এই আমার দেখা সবচেয়ে রঙবহুল সূর্যাস্ত ।
বছরের শেষ সূর্য নিজের সব রং বিলিয়ে অস্তাচলে গেল ।
আমরাও সাড়ে ছটার সিটিসি ধর্মতলার বাসটা ধরার মনস্থ করে ইউটার্ন নিলাম ।
নীল শাড়ি
দেবনাথ সাঁতরা
ঢেউয়ের আঘাতে কূল ভেঙে যায়
আজ ইচ্ছেরা বানভাসি
মন তোকে আরো কাছে পেতে চায়
তবু আজও স্বপ্নেরা কানামাছি
স্বপ্নগুলো তাই উড়িয়ে দিলাম
যেগুলো দেখা এখনো বাকি
আজ সারারাত তোকে দিতে চাই
বাকি সব টুকু ফাঁকি।
দুঃখ কষ্ট থাকে যদি কিছু
আজ সেগুলো থাকবো ভুলে
আজ গল্পটা আমাদের নিয়ে
তোর নীল শাড়ির আঁচলে।।
রক্তস্রোত
ইঞ্জামামুল হক
রক্তস্রোতে ভেসে গেল আমার নাজুক বদন
রক্তাক্ত হয়ে গেল আপাদমস্তক;
একখানি বুলেট এসে বিঁধেছে আমার বক্ষে
মহাধমনির কপাটিকায় হয়েছে ফুটো
শিরার রক্ত বয়ে যাচ্ছে গলগল ।
মাত্র এক ক্রোস দূরে বন্দুক হাতে
চেপে দিয়েছ ট্রিগার;
তোমার হাত একটুকু কেঁপে উঠেনি;
ধমনীর রক্ত বয়ে যাচ্ছে স্ফুলিঙ্গ দিয়ে ।
আমার রক্তে রঙ মেখেছ গায়ে
আমার রক্তে করেছ উল্লাস;
সবুজ পাতার খামে রক্তের দাগ
লেগেছে;একখানি চিরকূট লেখা তাতে
অভিযোগ,অভিশাপ তোমার নামে ।
শঙ্কিত অগ্নিসখ
ওয়াসিম সেখ
পরিগ্রহ বাতাবরণ ভয়ার্ত আবেশ ।
কাপুরুষতা আজ পীঠান্তের দিক নির্দেশ।
সম্মুখপাণে নমনীয়তা প্রবাহ
সাহসের নীতিবেশ।
আবহনের দমনীয়তা বিপরীতের কঠোর নীতির আদেশ।
নিমেষের সময়ান্তে নিঃশেষ প্রাণ।
সম্পর্কের মিলন সেতুর সময়ে
নীতির ভঙ্গন।
চারিদিকে শোকের ছায়া অব্যাহত শঙ্কিত আবহে।
ফেরার দেশে
রিতেশ গোস্বামী
একদিন বৈকালের শেষ লগ্নে সূর্য যখন ডুবি ডুবি আর দূর মাঠের তেপান্তরের তালগাছ গুলি আকাশের সোনালী সাগরের মধ্যে ভাসছে ঠিক সেই লগ্নে নিজের গৃহের পথ ভোলা একটা পাখি এদিক ওদিক উড়ে বেড়াচ্ছিল|
ঘরে থাকাকালীন সেই ঘরের কদর বেশ করেনি সে, তবে আজ যখন সে অজানা পথে দিকভ্রষ্ট তখন তার ঘরের মধ্যেকার লিপ্ত ভালোবাসাটা বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে | মনে পড়ছে ছোট্ট গৃহের স্নেহের আদলের কথা | আজ সে চঞ্চল সেই ঘরে ফেরার জন্য | তার ব্যাকুল কণ্ঠে ধ্বনিত,
"আমার ছোট্টো কুঠিরের
শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা,
প্রাণের ছোয়ায় ঘেরা সে যে
সবার চেয়ে খাসা |"
অনুকবিতা
চিতায়
সেখ সাবির মোল্লা
চিতায় পোড়ে নিস্প্রাণ দেহ দাউ দাউ ভয় ঘিরে ধরে অন্তরে।
ক্ষুধা,বিদ্বেষ,বিচ্ছেদে পুড়েছে কতকাল সেই প্রাণ কেউ কি খবর রাখে।
(সেখ সাবির মোল্লা।)
ধানের খেত
শেখ মনিরুল ইসলাম
যদি ভাবি তুমি, সে নারী
যে নারীকে বক্ষে জরি।
বুক ভরিয়ে স্নেহের ছায়াড়
স্নিগ্ধ বহু শ্রান্ত কায়া।
উড়োচিঠি ( কিছুটা অংশ )
প্রভাত মণ্ডল
রক্ত বিহীন যুদ্ধ শেষে আসবে উড়ো চিঠি
বদলে যাবে হৃদয় বীণার হাজার ব্যথার স্মৃতি ,
শান্ত হবে এই পৃথিবী শান্ত হবে তুমি
তোমার চোখের কাজল হব নাইবা থাকি আমি।
লিমেরিক-০১
শংকর হালদার
মদের নেশায় মদন খুড়ো মদ কিনতে হাটে
পুলিশ মামা সেথায় ছিল সূয্যি তখন পাটে ।
এলো পাতাড়ি মার দিল
কাছা খুলে পালিয়ে গেল,
গায়ের ব্যথা সারাতে খুড়ো জলে সাঁতার কাটে ।
লিমেরিক-০২
চাঁদের আলোয় হাট বসেছে রবি গেছে ঘরে
আকাশ জুড়ে বিকিকিনি লক্ষ তারার ভিড়ে ।
আকাশ ভরে রঙে রঙে
বাতাস বয় ঢঙে ঢঙে,
রবি শশীর এমন খেলা চলছে দেশ জুড়ে ।
হাইকু
শ্যামল অধিকারী।।
১.নব কিরনে
রবি জাগ্রত হয়
বৈশাখী প্রাতে
২.এলো দুঃস্বপ্ন
মহামারির ধ্বংস
স্বজন কাঁদে
৩.নীরব প্রেম
চোখে চলে সংলাপ
ইচ্ছে আলাপ
৪.ভিক্ষা পায় না
আস্তাকুড়ে সম্বল
নিঃস্ব ভিক্ষুক
৫.পথে ভিক্ষুক
পায় না তারা খাদ্য
তোমরা ভাবো
অনুভূতি
পিনাক
তখন ২০০৩ বা ০৪ সাল হবে,
সিনেমা "আলো" বেশ জনপ্রিয় তখন,
সঙ্গে গান গুলোও।
এক দুপুরে একসাথে তুমি আমি দেখার পর বলেছিলে "আমি যখন মরে যাবো তখন গান গুলো শুনিস"।
আজ বৃষ্টির একলা দুপুরে যদি "যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন" শুনি একটা কথা খুব মনে হয়,
পায়ের চিহ্ন চিরস্থায়ী না হলেও অনুভূতি অমলিন।
যখন প্রবল বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় আজও আমার ভালবাসার ও প্রেমের শহর ভেজে সাথে ভিজি আমিও,
তোমার স্পর্শ ও বকাটাকে ছাড়া,
শুধু অনুভূতিকে পাশে নিয়ে।
যখন হঠাৎ সন্ধ্যায় জড়িয়ে আসা ঘুম ভেঙে নিজের খাবার নিজেই বানিয়ে খেতে হয়
তখন একটা কঠিন দলা গলা থেকে ভেঙে পড়া বাঁধ হয়ে বেরিয়ে আসতে চাইলেও অনুভূতির ভালোলাগায় তা শান্ত হয়।
বৃষ্টি ভিজে চিরাচরিত অভ্যাসে আঙ্গুল যখন দ্বিতীয় চায়ের কাপটাতেও চা ভরতে চায় তখন অনুভূতি সান্ত্বনা দেয় ওপর মানুষটির চা এখন আর খেতে না ভাললাগার অজুহাতে।
আজও বৃষ্টি ভেজে শহর।
মাটি ভেজে, হাওয়া ভেজে,
ছাদ, বারান্দা, জানলা ভিজে ঝাপসা হয় কাঁচ।
দুরন্ত হাওয়ায় পরিশ্রান্ত হই আমিও।
হ্যাঁ তোমার শারীরিক চিহ্ন আর পড়ে না "এই বাটে"।
কিন্তু অনুভূতি বয়ে চলে বৃষ্টি ভেজা হাওয়া আর মাটির আমাদের দুজনেরই ভাললাগার গন্ধ হয়ে।
কঠিন সত্যে আজ তুমি আমার কাছে শুধু অনুভূতি।
যা স্পর্শ ও কথা সুখের থেকে কম হলেও
জীবন চালানোর রসদের একমাত্র পরিপন্থী।
Thanks for posting my travel story . It's a nice gift in the morning 😊
ReplyDelete💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐