PravatiPatrika

Friday, May 15, 2020

শুধু কবিতা

                           দূর্বাদলশ্যাম...
                                শঙ্খশুভ্র পাত্র

ভীমের ছদ্মনাম নিয়ে এলে আমি কি বলতে
পারি অত:কিম ! রোমান হরফে আমি রোমাঞ্চ
জাগাতে পারি না অতশত ৷কায়ক্লেশে পড়ি ওই
বর্ণসমাগম ৷ যথেষ্ঠ উদ্ধারপর্বে মনে জাগে
নিম্নভূমি... অশ্রুতেই ভরে যায় খেত ৷ এতটা
সহজ নয় — "ভাবো,অন্যভাবে ৷" সত্যি আলোচক
লোচন-অন্ধ হলে ছন্দের কী-ই বা এসে যায় !
অদ্ভুত খেয়ালে তুমি গড়ে নাও গরুড়-পুরাণ ৷
মেদিনীপুরের মাটি  ভোলে না সে-দূর্বাদলশ্যাম...





       সামাজিক দূরত্ব
               সৌমিত্র মজুমদার

জীবনের থেকে চুরি হয়ে গেছে
সোনালী স্বপ্নগুলো,
আকাঙ্ক্ষার আকাশে
      ভিড় করে আছে
         উদগ্রীব শকুনের দল !
কি যেন এক ভয়ঙ্কর তিথি
আড়াল আবডাল থেকে
উঁকি দ্যায় নির্মম মহাকাল,
জানান দ্যায় ---
পৃথিবীজুড়ে বাজতে চলেছে
আত্মরক্ষার ভয়ার্ত শীৎকার
     'তফাৎ যাও'।



         বৈপরীত্য
                বিকাশ পণ্ডিত

বিমান চেপে কেউ বা ফেরে ঘরে
কোরেন্টাইন বিলাসবহুল বাড়ি ;
কেউ বা ফেরে হেঁটে হেঁটেই আজও
ফেরার স্বপ্ন যায় পিষে মালগাড়ি।

কারোর জন্য অঢেল খাবার আসে
কামড় দিয়ে বারো আনাই ফেলে ;
ভুখা মিছিল আজও পথে হাঁটে
হয়তো কবে দয়ার দান মেলে।

ধনীর দুলাল মায়ের কোলে হেসে
বাড়ি ফেরার আমোদ ফেরে খুঁজে ;
আরেক ছেলে মায়ের ট্রলিব্যাগে
ক্ষুধা আর ক্লান্তিতে চোখ বুজে।

বিদেশ ফেরত বাবু বিবির দল
শীততাপে খোশমেজাজে হাসে ;
পরিযায়ী বেঁচে থাকার আশায়
হাঁটতে থাকে প্রখর বোশেখ মাসে।

'সবাই সমান'এখন যদি শুনি
বলতে পারি এসব কথা মিছে,
ধনী থাকে চোখের আগে আজও
গরিব কাঁদে পড়ে সবার নীচে।


  সামান্য কথকতা
       সোমনাথ মুখার্জী

নদী ছুয়ে যায় মন
তুমি থাকো নীল জলে
এসো আজ স্নান সারি
দুয়ে দুই গল্প ছলে।

কোনো এক স্বপ্ন থেকে
স্বল্পবাক কল্পনার
ছবি আঁকি গান গাই
মগ্ন মন দুজনার।
               

    যদি তোমাকে পাই
         অনাদি মুখার্জি

যদি তোমাকে কোনোদিন পাই,
 একান্ত আপন করে ,
ভাসবো আমি মেঘ হয়ে ,
তুমি বৃষ্টি হয়ে ভেজাবে!
হাসি ফুটবে মুখে যেমন
যেমন কৃষক হাসে নব্বানে সুখে!
মনের আনন্দে হেসে পড়বে,
কাশ ফুলের মতোন বাতাসে!
ঝরনার মতোন ঝরে পড়ব,
দুই জনে পাহাড় থেকে !
জোসনা রাতের হাটবো দুই জনে,
পাশাপাশি তোমার হাত টি ধরে !
আজ সব উপমা অর্থহীন হয়েছে,
তোমার একান্ত আভাস যে !


  মুক্ত ভুবনের আহ্বান
        রাজকুমার ঘোষ

সব কিছু আজ থমকে গেছে,
জীবনটা গতিহীন
অচেনা অদেখা শত্রুর কাছে
আমরা পরাধীন।
বসে থেকে ছাদে, উদাস মনে
তাকাই আসমানে
ছুটে চলে চাই, তখনই ভাবি,
যাই বা কোনখানে?
ঠাকুর, আল্লা, গড যে আজ
সকলেই অসহায়
ঘরের মধ্যে বন্দী সবাই
প্রাণ রাখাটাই দায়৷
প্রাণঘাতী এক মারণ রোগের
জন্ম দিয়েছে চিন
তারই জেরে কাঁপছে বিশ্ব
কাটাচ্ছে দুর্দিন।
মৃত্যু ভয় দানা বেঁধেছে
সারা বিশ্বের মাঝে
সর্দি-জ্বর, কাশির ওষুধ
লাগে না কোনো কাজে
এমন ব্যাধিতে ধুঁকছে মানুষ
খুঁজছে প্রতিষেধক
সবার কাছে ভগবান তাই
নার্স ও চিকিৎসক
বুদ্ধিজীবী, নেতা-মন্ত্রীও
হয়ে গেছে দুর্বল
এইতো সময় পাশে থেকে
বাড়াবে মনোবল
জনগণ আজ সহায়হীন
অজানা আতঙ্কে গ্রাস
অপেক্ষা শুধু সেই দিনটার
রইবেনা করোনা ত্রাস
কবেই বা আসবে সেই দিন,
মুক্ত এ ভুবনে ফিরে
মৃত্যুভয় আর বন্দীজীবন
থাকবে না আর ঘিরে।


                আত্ম-কারা
                   বদরুদ্দোজা শেখু


রাত দুপুরে কোকিল ঝুরে মুহুর্মুহু কুহু কুহু,
চারিদিকে বিষণ্ণতা, বিপন্নতার বইছে হু হু
উদাস বাতাস,করোণা-ত্রাস   bঝড়ের মতো সংক্রমিত,
বসছে না মন, প্রিয় স্বজন সবাই এখন দূরত্বিত ---
সমন্বিত হিতের জন্য আমরা এখন গৃহবন্দী
নন্দিত নয় এই ব্যবধান , তবু আমরা করছি সন্ধি
বাধ্য এবং অসহায় হয়েই , দায় আমাদের, আমাদের-ই----
করোণা-দানবকে হারাতে না হয় যাতে অযথা দেরী !
এরই জন্য বসন্ত আজ দুয়ারে এসেও যাচ্ছে ফিরে
বসন্ত-দূত অপ্রস্তুত ব্যর্থ মাতম  ঘরবাহিরে,
প্রকৃতি রঙে রেঙে উঠলেও মানব-সমাজ দিশেহারা--
হৃদশহরে প্রহর প্রহর আত্ম-নিয়ন্ত্রণের কারা !!


       র্বষা
         শেখ মনিরুল ইসলাম

কত গান
কত নাচ,
বাজে তালে তালে।
ময়ূর নাচেজ
পেক্ষম তুলে,
 র্বষা কালে।
চাতকের কিচি-  মিচি
মনের খাম- খ্যায়ালে,
বাবুই আর টুন- টুনি
 বাঁসা  বাধেঁ
গাছের ডালে ডালে।


             বাঁচা হলো দায়
                দিলীপ রায়

উচ্চবিত্ত ঋন নিয়ে, দিয়ে দেয় ডুব
কিছুদিন পরেই তা হবে যে মুকুব।
সোধ দেবার দায় নেই মন্ত্রী আছে সাথে
রাতারাতি ধনী হয় থাকে দুধে ভাতে।
বরলোকের সন্তান বিদেশেতে থাকে
সরকার প্লেনে করে দেশে নিয় আসে।
পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে ফেরে
মাঝ পথে কত শ্রমিক না খেয়ে যে মরে
কর্মহীন হয়ে শ্রমিক অনাহারে রয়
চোখ বুঁজে সরকার মুখ বুজে বুঁজে।
রেশনেত চাল আটা তবুও তো মেলে
তাই দিয়ে নিন্মবিত্তের কোনমতে চলে।
নানা দিক থেকে গরীব সাহায্য টা পান
তাই খেয়ে কোনমতে বাঁচে তবু প্রান।
কর্মহীন মধ্যবিত্তের বাঁচা হলো দায়
ঘরেতে বাড়ন্ত সব , তবু নিরুপায়।
লকডাউন মেনে তারা ঘরে বন্দি রয়
কেউ খোঁজ রাখেনা তো বর অসহায়।
ভুখা পেটে দিন কাটে বাঁচা হলো দায়
স্যানিটাইজার দিয়ে শুধু হাত ধুয়ে যায়।



এরাই নাকি আসল ভারতবাসী! 
            সেক আসাদ আহমেদ

মিথ্যার অপশাসন ;
সত্যের যুগে অসত্যের আসন - দুই তন্ত্রে
কেন্দ্রীয় তন্ত্র আর বিপরীতে রাজ্য তন্ত্র।।

 নির্বোধ চিত্তে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা
নির্লজ্জ সুরে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার  ।।

ক্ষমতার অপব্যবহার
ধর্মে রাহাজারি ,
হিন্দুত্বের নামে আস্ফালন
তিরঙ্গা নয় গেরুয়া হোক প্রশাসন
এরাই নাকি আসল ভারতবাসী  !


                  আর্তনাদ
                        ঝিমলি ব্যানার্জি

শুনতে পাচ্ছি চারিদিকে আর্তনাদ ....
এ কিসের আর্তনাদ ?
এ অসহায় নারীর আর্তনাদ ...
আমরা নাকি প্রাণী জগতের উন্নত প্রাণী !!!
কোথায় আমাদের মানসিকতা উন্নত ??
আমরা তো পশুর ও অধম !!!
ওদের মধ্যে যে অনুভূতি ...ভালোবাসা আছে ..
আমাদের নেই...
আমরা যেন অধঃপতনের পাঁকে পড়ে যাচ্ছি ....
আমরা  আগামী প্রজন্ম কে কি দিয়ে যাবো ?
তারা কি দেখছে !!!!
শুধু ই চারিদিকে অনাচার  ....
ছোট থেকে বড়ো নারীর প্রতি অত্যাচার !!!
আধুনিক যুগে মেয়েরা যেমন স্বনির্ভর ..
তেমন ই কেন তারা  আজ নিরাপদ নয়..
কে দেবে তাদের নিরাপত্তা .
নারী পেলেই নর পিশাচের  দল ছিঁড়ে খাচ্ছে ...
খুবলে  নিচ্ছে তাদের শরীর এর অংশ !!!
এ কেমন নিরাপত্তাহীন সমাজ এ বাস করছি আমরা...যেখানে আমাদের পায়ে পায়ে মৃত্যুভয়..
এ কেমন সমাজে বাস করছি আমরা যেখানে
বলা হচ্ছে...বেটি পড়াও....বেটি বাঁচাও ..
কিন্তু পারছি কি আমরা বেটি দের রক্ষা করতে?
পারছি কি সেই নরপিশাচ দের শাস্তি দিতে?
আমরা অসহায়!!  আমরা শঙ্কিত !!!
জানি না আগামী দিন আমাদের জন্য কি রেখেছে .



No comments:

Post a Comment