কাঙালপনা
শ্যামাপ্রসাদ সরকার
যেখানে থমকে আছে স্নানবেলা ছায়াটুকু ভিজেছে সন্তর্পণে,
সকালের রাধাচূড়া গুলো জড়ো হয়ে আছে
দু খানি সলজ্জ পা এর পাতায়।
আলগা আদরে দেখি স্বেদাক্ত পিঠ,
দীঘির অন্ধকার ঘন চুলে আজও,
কি অবলীলায় ভোর মেখে নাও দুহাতে-
বিকেলের রোদ এসে চুম্বন করেছে গ্রীবায়।
কৃষ্ণচূড়ার মত লোকদেখানো আড়াল,
তারপর আকাশে উঠেই ছুঁয়েছ পাতার খাঁজ,
যতই দুচোখ ভরে দেখতে চেয়েছি,
অহেতুক রৌদ্রের হাসিতে ভিজিয়েছ ঘাড়, পিঠ!
.
কতবার ধূলো মেখে উঠোনে তোমার,
যাচনা করেছি উদবৃত্ত কাঙালপনায়!
কখনো ফেরাওনি দু মুঠো আমানি পান্তায়,
তৃপ্ত করেছে অর্ধভূক ভিক্ষুকের জঠর!
যেখানে থমকে আছে দুপুরের স্নানবেলা,
ছায়াটুকু ভিজেছে সন্তর্পণে একা
ডাকনামে ডেকেছি গোপনে জানো?
ফিসফিস করে কি নির্লজ্জ স্পর্ধায়।
যোগ আড়ালে
মিজানুর রহমান
নিহাত একখানা সম্পূর্ণ মন...
কারোর অমসৃণতা ছিলই, দাগ শূন্য
একটা যোগ আশ্বাস।
হাতের তালুতে যখন হঠাৎ নতুন,
সর্বাঙ্গ হতে দ্বিধা ছিলনা...
চূড়ান্ত নম্র আস্বাদন।
দুই তিন কালো রাত জলেই ভাসান
মন, যোগ সম্পৃক্ত, ত্রাস খনন।
নিমেষ কেটেই নদীতে যখন স্বপ্নের মাঝি
হৃদয়ের পেট নিয়ে চিন্তা!
ভাটিয়ালি যথেষ্ট নির্বাচন।
অচ্ছুৎ ত্রাস বাধা কি মানে! জড়তা।
কর্কশ কোদাল কোপে ওই নির্লিপ্ত রক্ত।
পাতার অজান্তে গাছ কাটা পড়ে!
সময়, হাঙ্গর ত্রাস হৃদয় ছিঁড়ে বিক্রি
দাম-দর কিছুটা হলেও বাকি।।
চকচকে তৈলাক্ত শহর
রহমতুল্লাহ লিখন
শহরের দেয়ালে দেয়ালে হচ্ছে সমারোহ
খোদাই হবে অট্টালিকাদের বীর গাথা
চিরস্মরণীয় হবে তাদের সভ্য মুকুটে মাথা।
এই উপলক্ষ্যে হবে ভোজের ছড়াছড়ি
আয়োজনে তৈলমর্দনে পটু দো তিন তলা বাড়ি
রাজসিক সব খানা খাবে প্রচীন বটের ঝুরি।
যথা দিনে অতিথিরা কালো ধোঁয়াতে হাজির
মধ্যরাস্তার পাজরগুলো বাহ্ বাহ্তে জাহির
মুখে সুখে চাহিদার সুনাম করে বাহির।
দু'ফোটা পেট্রোলের মহামারি কি আনন্দ
খেয়ে দেয়ে নেয়ে ঝাড়বাতির মুখ বন্ধ
সামান্য হুইস্কিতে ল্যাম্পপোস্ট অন্ধ।
মাইকে ধ্বনিত হয় অট্টালিকার আরশ বিজয়ে
তাগিদ চলে প্লটে ফ্ল্যাটে উন্নয়ন আদায়ে
চকচকে মার্সিডিজের চাকায় সাজিয়ে।
বিনা আমন্ত্রণে শিমুল কৃষ্ণচূড়ারা ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে
সামান্য ঝুটা খাদ্যে ডাল পালা বাকিয়ে
ডাস্টবিনে আমে আটির চারা জিভ দেয় ঝাঁকিয়ে।
তখনই জোরতালে আওয়াজ আসে সভাতে
আসমানে রাখতে চালু মহাউন্নয়ন রথে
গাছা আগাছা পরগাছা ছাটাই রাতের জাগা পথে।
বৈশাখ মাসের একটি দিন
কেয়া সর্দার
বৈশাখ মাসের একটি দিন
সূর্যের প্রখর উত্তাপে-
বসুন্ধরাকে করেছে উত্তপ্ত৷
দক্ষিণা বাতাস কোথায় যেন মুর্ছা গেছে৷
সাদা বক ও সামকুরের দল
উড়ে এসে আম গাছে বসে ৷
চাষির কপালের ঘাম
পার্বত্য নদীর মতো পায়ের দিকে বয়ে যায় ৷
প্রকৃতি একদম নিস্তব্ধ ৷
কিন্তু দীর্ঘ সময় পর৷
সূর্য তার ক্লান্ত মুখ খানা নিয়ে
ঢলে পড়ে পশ্চিম আকাশে ৷
আবার বাতাসে ভেসে আসে
পাখিদের গান৷
ছুটে আসে দক্ষিণা বাতাস ৷
প্রকৃতি যেন এবার খুবই ব্যস্ত৷
নীলকণ্ঠ
প্রদ্যুৎ দাস
আমি নীলকণ্ঠ,দুখের আগুনে জলন্ত ছাই-
আমার মৃত্যু নাই।
গরীবের ঘরে জন্ম আমার; গা গতরে খেটে খাই।
আমি নীলকণ্ঠ,অশান্ত সমুদ্রের ঢেউকে হার না মানা কেউ;
আমি বেঁচে থাকি হাজারো মন্বন্তরে,
দুর্যোগে, খরা- মহা প্রলয়ে-
কলেরায় ফের করোনায় মরকে...
তবু বেঁচে থাকি.....
আমি যত গরীবের সাথি আর গরীবের....
আমি লাঞ্ছিত, বঞ্চিত স্বর্গ- মর্ত- পাতালের...
বুক পেতে নিই, রাষ্ট্রের বাণী আর শাস্ত্রের ---
আমি ভেসে চলি মহা বন্যায়---
মেনে নিই শতশত অন্যায়......
আমি ছেলে যত অভাগীর
সর্ব ত্যাগী সন্যাসীর ন্যায়-
তীব্র দহনে- সহনে -জীবনে মরণের নেই ভয়.....
আমি নীলকন্ঠ...
লোভ নেই অমৃতের...
গরলে-সরলে- নিরলে ক্লান্তি হীন হ্রেষা....
আমি সন্তান যত কৃষকের..
পৃথিবীর মানুষের অন্ন জোগানের কর্তা..
আমি ধর্তা যত সব নিয়মের.....
আমি নীলকণ্ঠ যত গরলের...
হাইকু ও সেনরু গাঁথা
প্রনব রুদ্র
১
বসন্ত আসে
পথ কালোর রাতে
বিষ দেহ খা।
২.
এখন খাঁ খাঁ
রেলে কাটা রুটিরা
আর হাঁটে না।
৩.
লোভের তেজ
মৃত্যু শিয়রে বসে
জোনাকী আলো।
৪.
আলো উড়লো
ঘড়ির টিক্ টিক্
বোধ ছা-হীন।
৫.
পোকারা হাঁটে
ফড়িং বসে ঘাসে
কাক আসছে।
৬.
খাঁজা পুকুর
পাখির ডানা নীচে
শীত নেমেছে।
৭.
চারদিকে হা
অপেক্ষা শান্ত শাপ
ঝড় উড়েছে।
৮.
মদের গ্লাস
মস্তিষ্ক প্লেটে
মৃত্যু চাটছে।
৯.
মানসিক স্ত্রী
বোধহীন স্পর্শ
মৃৎ উষ্ণতা।
১০.
শনি সংকেত
ক্ষেত ফসল হীন
চাষী ঝুলছে।
১১.
মা শব্দ নয়
ব্রক্ষ্মান্ড কাছে পাওয়া
অনাথ বোঝে।
১২.
জ্বলছে মা গা
স্টাইরিন বাতাসে
অগ্নি স্ফূর্তি।
মৃত্যু রূপা
সুমন ভট্টাচার্য
ঝড়ের এই তাণ্ডব রাতে
হঠাৎ আমি ছাদে উঠে পড়ি।
উড়ে যাবো, মরে যাবো ভয় নেই,
আমি এক নির্ভীক অশরীরী।
এত দুঃসাহসী ছিলাম নাকি, এমন এলোপাথাড়ি!
তারপর সেই বৃদ্ধার দাঁত বের করা খ্যাঁক খ্যাঁক হাসি,
উল্টোদিকের টিনের চালে,
অন্ধকার আর বিদ্যুতের ঝলসানী গায়ে ।
যেন চে য়ে আছে আমারই দিকে,
চেনা নাকি, দেখেছি কোন অস্ফুট স্বপ্নে আগেই?
উন্মাদিনী চেঁচায় বিকট স্বরে
" মরবি সব মরবি।
ঘোর অন্ধকার ছিড়ে খাবে
তোদের লিঙ্গ, যোনি, মাংস , হাড়।
জিতেছিস বহুবার,
ঘ্যাম, উঁচু কলার অহংকার।
এবার মরবি সব মরবি, সব ধ্বংস হাহাকার।।"
লক্ষ লক্ষ ছায়া শরীর ঘিরে ধরে আমায়
চাইছে জবাব
সহস্র বছরের লাঞ্ছনা
সহস্রাধিক অপমান -
তারই মাঝে নাচে
তাণ্ডব নাচে ওই উন্মাদিনী নির্বসনা।।
তারই বিকট বিদ্যুৎ হাসি
ঝলসিত চারিধার।
অসীম শূন্যে ধ্বনিত
সেই মৃত্যু রূপার বিরাট হুহুঙ্কার -
"মরবি সব মরবি।
মরবি সব মরবি এইবার" ।
মা -- ২
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
তাঁকে না ডাকলে চলে না !
সারাবছর না ডেকেই যদি কাটে তবে কেন ডাকো ?
ভানের পালন !
মাতৃদিবস আর বিজয়া দশমী বড় জোর
আত্মীয় প্রশ্নের বাধ্যতা
এখন জল বা খাবার বেশ নাও মশারি টাঙাও
তখন মনে পড়ে........অকৃতজ্ঞ !
চোখ পরিষ্কার চেতনায় বিস্মৃতির গ্লকোমা ?
কেন ডাকো ?
বেচারির হাতড়ে বাথরুম বা হাঁপানি কাশির টান
আরও কষ্ট দেবে !
তোমার সব প্যাথি ফেল বাতিলের প্রখর
টেলিপ্যাথি ঘুমহীন।
আত্মজ নিজেই নিজের চিতাকাঠ বয়
তাঁর যে প্রাণে সয় না......!!
বিধাতা
ফিরদৌসী বেগম
বিধাতা,,
পৃথিবী আজ বড়ো ক্লান্ত!
নিশাচর রাএি গুণে ,
ভেসে গেছে কবে জানি,
সে সুখের উচ্ছাস !
এক এক করে সভ্যতাও গুটিয়ে নিয়েছে হাত পা !
কোনো উপায় নেই ,
পৃথিবীর দুকূল ছাপিয়ে গেছে ক্ষুধার আর্তনাদ আর বুকভরা যন্ত্রণায় !
শুধু বজ্রের আঘাতে তোলপাড় ঢেউ !
শান্তি সুখের পৃথিবী আজ বুঝি সুদূর অতীতের ভাবনা !
বিধাতা ,
যারা শক্তির কবলে গড়েছিল আকাশ পাহাড় অহংকারের বোঝা ,
তারাও আজ তপ্ত !
তারাও আজ বুঝি ভয়ে ভয়ে স্বপ্ন দেখে !
বিধাতা ,
সভ্যতাও আজ পরিণত
তোমার নিয়তির হাতে !
শ্যামাপ্রসাদ সরকার
যেখানে থমকে আছে স্নানবেলা ছায়াটুকু ভিজেছে সন্তর্পণে,
সকালের রাধাচূড়া গুলো জড়ো হয়ে আছে
দু খানি সলজ্জ পা এর পাতায়।
আলগা আদরে দেখি স্বেদাক্ত পিঠ,
দীঘির অন্ধকার ঘন চুলে আজও,
কি অবলীলায় ভোর মেখে নাও দুহাতে-
বিকেলের রোদ এসে চুম্বন করেছে গ্রীবায়।
কৃষ্ণচূড়ার মত লোকদেখানো আড়াল,
তারপর আকাশে উঠেই ছুঁয়েছ পাতার খাঁজ,
যতই দুচোখ ভরে দেখতে চেয়েছি,
অহেতুক রৌদ্রের হাসিতে ভিজিয়েছ ঘাড়, পিঠ!
.
কতবার ধূলো মেখে উঠোনে তোমার,
যাচনা করেছি উদবৃত্ত কাঙালপনায়!
কখনো ফেরাওনি দু মুঠো আমানি পান্তায়,
তৃপ্ত করেছে অর্ধভূক ভিক্ষুকের জঠর!
যেখানে থমকে আছে দুপুরের স্নানবেলা,
ছায়াটুকু ভিজেছে সন্তর্পণে একা
ডাকনামে ডেকেছি গোপনে জানো?
ফিসফিস করে কি নির্লজ্জ স্পর্ধায়।
যোগ আড়ালে
মিজানুর রহমান
নিহাত একখানা সম্পূর্ণ মন...
কারোর অমসৃণতা ছিলই, দাগ শূন্য
একটা যোগ আশ্বাস।
হাতের তালুতে যখন হঠাৎ নতুন,
সর্বাঙ্গ হতে দ্বিধা ছিলনা...
চূড়ান্ত নম্র আস্বাদন।
দুই তিন কালো রাত জলেই ভাসান
মন, যোগ সম্পৃক্ত, ত্রাস খনন।
নিমেষ কেটেই নদীতে যখন স্বপ্নের মাঝি
হৃদয়ের পেট নিয়ে চিন্তা!
ভাটিয়ালি যথেষ্ট নির্বাচন।
অচ্ছুৎ ত্রাস বাধা কি মানে! জড়তা।
কর্কশ কোদাল কোপে ওই নির্লিপ্ত রক্ত।
পাতার অজান্তে গাছ কাটা পড়ে!
সময়, হাঙ্গর ত্রাস হৃদয় ছিঁড়ে বিক্রি
দাম-দর কিছুটা হলেও বাকি।।
চকচকে তৈলাক্ত শহর
রহমতুল্লাহ লিখন
শহরের দেয়ালে দেয়ালে হচ্ছে সমারোহ
খোদাই হবে অট্টালিকাদের বীর গাথা
চিরস্মরণীয় হবে তাদের সভ্য মুকুটে মাথা।
এই উপলক্ষ্যে হবে ভোজের ছড়াছড়ি
আয়োজনে তৈলমর্দনে পটু দো তিন তলা বাড়ি
রাজসিক সব খানা খাবে প্রচীন বটের ঝুরি।
যথা দিনে অতিথিরা কালো ধোঁয়াতে হাজির
মধ্যরাস্তার পাজরগুলো বাহ্ বাহ্তে জাহির
মুখে সুখে চাহিদার সুনাম করে বাহির।
দু'ফোটা পেট্রোলের মহামারি কি আনন্দ
খেয়ে দেয়ে নেয়ে ঝাড়বাতির মুখ বন্ধ
সামান্য হুইস্কিতে ল্যাম্পপোস্ট অন্ধ।
মাইকে ধ্বনিত হয় অট্টালিকার আরশ বিজয়ে
তাগিদ চলে প্লটে ফ্ল্যাটে উন্নয়ন আদায়ে
চকচকে মার্সিডিজের চাকায় সাজিয়ে।
বিনা আমন্ত্রণে শিমুল কৃষ্ণচূড়ারা ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে
সামান্য ঝুটা খাদ্যে ডাল পালা বাকিয়ে
ডাস্টবিনে আমে আটির চারা জিভ দেয় ঝাঁকিয়ে।
তখনই জোরতালে আওয়াজ আসে সভাতে
আসমানে রাখতে চালু মহাউন্নয়ন রথে
গাছা আগাছা পরগাছা ছাটাই রাতের জাগা পথে।
বৈশাখ মাসের একটি দিন
কেয়া সর্দার
বৈশাখ মাসের একটি দিন
সূর্যের প্রখর উত্তাপে-
বসুন্ধরাকে করেছে উত্তপ্ত৷
দক্ষিণা বাতাস কোথায় যেন মুর্ছা গেছে৷
সাদা বক ও সামকুরের দল
উড়ে এসে আম গাছে বসে ৷
চাষির কপালের ঘাম
পার্বত্য নদীর মতো পায়ের দিকে বয়ে যায় ৷
প্রকৃতি একদম নিস্তব্ধ ৷
কিন্তু দীর্ঘ সময় পর৷
সূর্য তার ক্লান্ত মুখ খানা নিয়ে
ঢলে পড়ে পশ্চিম আকাশে ৷
আবার বাতাসে ভেসে আসে
পাখিদের গান৷
ছুটে আসে দক্ষিণা বাতাস ৷
প্রকৃতি যেন এবার খুবই ব্যস্ত৷
নীলকণ্ঠ
প্রদ্যুৎ দাস
আমি নীলকণ্ঠ,দুখের আগুনে জলন্ত ছাই-
আমার মৃত্যু নাই।
গরীবের ঘরে জন্ম আমার; গা গতরে খেটে খাই।
আমি নীলকণ্ঠ,অশান্ত সমুদ্রের ঢেউকে হার না মানা কেউ;
আমি বেঁচে থাকি হাজারো মন্বন্তরে,
দুর্যোগে, খরা- মহা প্রলয়ে-
কলেরায় ফের করোনায় মরকে...
তবু বেঁচে থাকি.....
আমি যত গরীবের সাথি আর গরীবের....
আমি লাঞ্ছিত, বঞ্চিত স্বর্গ- মর্ত- পাতালের...
বুক পেতে নিই, রাষ্ট্রের বাণী আর শাস্ত্রের ---
আমি ভেসে চলি মহা বন্যায়---
মেনে নিই শতশত অন্যায়......
আমি ছেলে যত অভাগীর
সর্ব ত্যাগী সন্যাসীর ন্যায়-
তীব্র দহনে- সহনে -জীবনে মরণের নেই ভয়.....
আমি নীলকন্ঠ...
লোভ নেই অমৃতের...
গরলে-সরলে- নিরলে ক্লান্তি হীন হ্রেষা....
আমি সন্তান যত কৃষকের..
পৃথিবীর মানুষের অন্ন জোগানের কর্তা..
আমি ধর্তা যত সব নিয়মের.....
আমি নীলকণ্ঠ যত গরলের...
হাইকু ও সেনরু গাঁথা
প্রনব রুদ্র
১
বসন্ত আসে
পথ কালোর রাতে
বিষ দেহ খা।
২.
এখন খাঁ খাঁ
রেলে কাটা রুটিরা
আর হাঁটে না।
৩.
লোভের তেজ
মৃত্যু শিয়রে বসে
জোনাকী আলো।
৪.
আলো উড়লো
ঘড়ির টিক্ টিক্
বোধ ছা-হীন।
৫.
পোকারা হাঁটে
ফড়িং বসে ঘাসে
কাক আসছে।
৬.
খাঁজা পুকুর
পাখির ডানা নীচে
শীত নেমেছে।
৭.
চারদিকে হা
অপেক্ষা শান্ত শাপ
ঝড় উড়েছে।
৮.
মদের গ্লাস
মস্তিষ্ক প্লেটে
মৃত্যু চাটছে।
৯.
মানসিক স্ত্রী
বোধহীন স্পর্শ
মৃৎ উষ্ণতা।
১০.
শনি সংকেত
ক্ষেত ফসল হীন
চাষী ঝুলছে।
১১.
মা শব্দ নয়
ব্রক্ষ্মান্ড কাছে পাওয়া
অনাথ বোঝে।
১২.
জ্বলছে মা গা
স্টাইরিন বাতাসে
অগ্নি স্ফূর্তি।
মৃত্যু রূপা
সুমন ভট্টাচার্য
ঝড়ের এই তাণ্ডব রাতে
হঠাৎ আমি ছাদে উঠে পড়ি।
উড়ে যাবো, মরে যাবো ভয় নেই,
আমি এক নির্ভীক অশরীরী।
এত দুঃসাহসী ছিলাম নাকি, এমন এলোপাথাড়ি!
তারপর সেই বৃদ্ধার দাঁত বের করা খ্যাঁক খ্যাঁক হাসি,
উল্টোদিকের টিনের চালে,
অন্ধকার আর বিদ্যুতের ঝলসানী গায়ে ।
যেন চে য়ে আছে আমারই দিকে,
চেনা নাকি, দেখেছি কোন অস্ফুট স্বপ্নে আগেই?
উন্মাদিনী চেঁচায় বিকট স্বরে
" মরবি সব মরবি।
ঘোর অন্ধকার ছিড়ে খাবে
তোদের লিঙ্গ, যোনি, মাংস , হাড়।
জিতেছিস বহুবার,
ঘ্যাম, উঁচু কলার অহংকার।
এবার মরবি সব মরবি, সব ধ্বংস হাহাকার।।"
লক্ষ লক্ষ ছায়া শরীর ঘিরে ধরে আমায়
চাইছে জবাব
সহস্র বছরের লাঞ্ছনা
সহস্রাধিক অপমান -
তারই মাঝে নাচে
তাণ্ডব নাচে ওই উন্মাদিনী নির্বসনা।।
তারই বিকট বিদ্যুৎ হাসি
ঝলসিত চারিধার।
অসীম শূন্যে ধ্বনিত
সেই মৃত্যু রূপার বিরাট হুহুঙ্কার -
"মরবি সব মরবি।
মরবি সব মরবি এইবার" ।
মা -- ২
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
তাঁকে না ডাকলে চলে না !
সারাবছর না ডেকেই যদি কাটে তবে কেন ডাকো ?
ভানের পালন !
মাতৃদিবস আর বিজয়া দশমী বড় জোর
আত্মীয় প্রশ্নের বাধ্যতা
এখন জল বা খাবার বেশ নাও মশারি টাঙাও
তখন মনে পড়ে........অকৃতজ্ঞ !
চোখ পরিষ্কার চেতনায় বিস্মৃতির গ্লকোমা ?
কেন ডাকো ?
বেচারির হাতড়ে বাথরুম বা হাঁপানি কাশির টান
আরও কষ্ট দেবে !
তোমার সব প্যাথি ফেল বাতিলের প্রখর
টেলিপ্যাথি ঘুমহীন।
আত্মজ নিজেই নিজের চিতাকাঠ বয়
তাঁর যে প্রাণে সয় না......!!
বিধাতা
ফিরদৌসী বেগম
বিধাতা,,
পৃথিবী আজ বড়ো ক্লান্ত!
নিশাচর রাএি গুণে ,
ভেসে গেছে কবে জানি,
সে সুখের উচ্ছাস !
এক এক করে সভ্যতাও গুটিয়ে নিয়েছে হাত পা !
কোনো উপায় নেই ,
পৃথিবীর দুকূল ছাপিয়ে গেছে ক্ষুধার আর্তনাদ আর বুকভরা যন্ত্রণায় !
শুধু বজ্রের আঘাতে তোলপাড় ঢেউ !
শান্তি সুখের পৃথিবী আজ বুঝি সুদূর অতীতের ভাবনা !
বিধাতা ,
যারা শক্তির কবলে গড়েছিল আকাশ পাহাড় অহংকারের বোঝা ,
তারাও আজ তপ্ত !
তারাও আজ বুঝি ভয়ে ভয়ে স্বপ্ন দেখে !
বিধাতা ,
সভ্যতাও আজ পরিণত
তোমার নিয়তির হাতে !
No comments:
Post a Comment