অবসরের গান
পৃথা চট্টোপাধ্যায়
দক্ষিণী হাওয়ার আরণ্যক মুহূর্তে
ভালোবাসার পরিযায়ী পথচলা
চিলেকোঠার জমে থাকা খড়কুটোয়
চড়াই এর ঘরবাড়ি
এই একান্ত অবসরের সঙ্গী
বাতাসে ভেসে আসা মৌরীফুলের গন্ধে
মনে পড়ে
তোমার ইচ্ছামন্ত্রে ধরা পড়া দিনগুলো
এখন সেসব সুদৃশ্য ফ্লাওয়ার-ভাসে বন্দী
কোনো নান্দনিক ছন্দের বাঁধনে
আজ সব মিথোজীবী অভ্যাস
দুরন্ত ইচ্ছারা লুকিয়ে থাকে চানঘরের গানে
আস্পর্ধা
অনিন্দ্যকেতন গোস্বামী
তখনও আকাশে মেঘ জমেনি-
তখনও পথে পথে লেখা হয়নি মানুষেরাও পরিযায়ী হতে পারে-
তখনও তাচ্ছিল্যের করোনা সন্ত্রাসের পথে নেমে আসেনি-
তখনও বন্ধুকে বন্ধু ডেকে সোফার উপরে বসায়-
তখনও ইতিহাস পড়ে লোকে রাজা-যুদ্ধ-সন্ধির অলিগলি-
তখনও ভূগোল পড়ে লোকে, সমুদ্রে আগ্নেয়গিরি।
নতুন দ্বীপের জন্ম-
তখনও সিসিলি দুঃখ চুষে নিচ্ছে দিগ্বিজয়ী নেপোলিয়নের-
তখনও উঠোনের মাটিতে আর্কিমিডিস খেলছেন জটিল অঙ্কের খেলা-
তখনও গুয়াতেমালায় মায়ানরা হেসেখেলে বিস্তার করে নিচ্ছে স্থাপত্য-
তখনও মানুষ ম্যামথের সাথে লড়ে-
তখনও মানুষ তুষার খুঁড়ে নিজের মাথাকে বাঁচিয়ে রাখে-
তখনও মানুষ বন্য-
তখনও মানুষ ন্যাংটো-
তখনও বজ্র-বৃষ্টি এলে মানুষ একশো অসহায়
এখনও তাই...
‘তবু বেঁচে থাকবো’
সীমাহীন আস্পর্ধা।
কবিতাগুচ্ছ-
অমিয় কুমার চৌধুরি
১
ল্যাম্পপোষ্ট
আমি মূর্খ হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত প্রতিবিম্ব হতে পেরেছি,
শরীরে ল্যাম্পপোষ্টের স্বভাব বিরাজ করছে ।
২
নদী
আমি জল হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত কান্না হতে পেরেছি,
শরীরে নদীর স্বভাব বিরাজ করছে।
৩
রামধনু
আমি নেতা হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত অভিনেতা হতে পেরেছি,
শরীরে রামধনু রং বিরাজ করছে।
৪
বিষ
আমি সাপুড়ে হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত ওঝা হতে পেরেছিলাম,
শরীরে বিষের স্বভাব বিরাজ করছে।
৫
কষ্ট
আমি সত্যবাদী হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত ঠোঁটকাটা হতে পেরেছিলাম,
শরীরে কষ্টের স্বভাব বিরাজ করছে।
৬
হিংসা
আমি ভদ্রলোক হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত নষ্টলোক হতে পেরেছিলাম,
শরীরে হিংসার স্বভাব বিরাজ করছে।
মৃত্যুরূপা
শ্যামাপ্রসাদ সরকার
তুমিও প্রেয়সী হলে
গর্জমান মেঘ চমকে ওঠে;
নখে দন্তে কি সুতীব্র ঘাত
আশ্লেষে রক্ত ঝরেছে কেবল।
তুমিও শান্ত হলে;
সুষুপ্তির শেষে কুন্ডলী শয্যায়,
জানলার জাফরিতে রোদ আসে;
মুহূর্তে বরফের মত গলে গেলে
আবিশ্ব প্লাবিত হতে পারে।
তুমিও প্রেয়সী হলে
তুচ্ছ রাজ্য রাজধানী
তরবারি হাতের মুঠিতে ধরে
ছিন্ন শির কয়েদীর নিয়ে
মালা গেঁথে পড়েছ গলায় !
মহাকাল নিশ্চুপে দেখে
প্রতিবার ক্ষুধিত রমণ নাচে
অন্ধকারে আবর্ত ঘিরেছে প্রেত
শিবাভোগে কি নির্লিপ্তি তোমার !
হাইকু কবিতা
শ্যামল অধিকারী
১.মেথর পাড়া
মেথরের সভ্যতা
জঞ্জাল সাফে
২.মেথর নোংরা
বলে বাবু ভায়ারা
নোংরা বাবুরা
৩.মেথর চাঁদ
চাঁদ হয়ে ফুটপাতে
দেশ গড়ছে
৪.পথে মেথর
সাফাই অভিযান
দেশের স্বার্থে
৫.মেথর তুমি
দেশ গড়ার সৈন্য
সমাজ স্বপ্নে
৬.বিশ্ব নির্নয়ে
দেশ জঞ্জাল মুক্ত
মেথর ধন্য
কালবৈশাখী
নন্দিতা মিশ্র
কালবৈশাখী হয়ে গেল।
মুছে গেল প্রকৃতির যত মলিনতা।
সজীবতায় প্রাণবন্ত প্রকৃতির ঔজ্জ্বল্য তাই ঠিকরে পড়ছে।
প্রতিটি সম্পর্কে একটা কালবৈশাখী দরকার।
ঘুণধরা যে ভুল গুলো আছে,
যে বিদ্বেষ,
যে ক্লান্তি,
একঘেয়েমি....
তা দূর হয়ে গিয়ে
ফিরে আসুক ঔজ্জ্বল্য।
ফিরে আসুক তারুণ্য।।
একটা কালবৈশাখী খুব দরকার
প্রকৃতির ন্যায় জীবনেও।।
পরিযায়ী শ্রমিক
বিশ্বজিত মুখার্জ্জী
পথশ্রান্ত,শরীরক্লান্ত,অসাড় ঘুমের ঘোর,
ওদের জীবনে ছিলনা প্রভাত,শেষ ঘুমেতেই ভোর।
শ্রমিক তুমি ঘুমিয়ে ছিলে,রেললাইনের পরে,
কালও তোমার ছিলনা জানা,এমনি যাবে মরে।
হায়রে আমার রাজা,তোর এমনি উন্নয়ন,
ওদের বুঝি জীবন নই,শুধুই অবমূল্যায়ন!
মালিক,তুমি উদারতায়,দেখাতে একটু মায়া,
পরমশান্তিতে থাকত ওরা,পেলে স্নেহের ছায়া।
না হয় একটু উচ্ছিষ্ট,পরত ওদের পাতে,
রাত্রিটা কাটিয়ে নিত,ঘুমিয়ে ফুটপাথে।
ওরাতো আর 'মানুষ না',তৃতীয় নাগরিক,
সামান্য মুনাফা খরচ হোত,মালিক শত ধ্বিক।
ওতোগুলো তাজা প্রাণ,অকালে গেল ঝড়ে,
চুরিরশ্রমে মালিক চড়ে ,উদবিত্তের পাহাড়ে।
ঝড়
রীতা রায়
ঝড় এসেছিল..ঝড় তো আসবেই ..
সে তো নিয়মের দাস ..
শুনেছ কী কখনো পিপীলিকার কান্না ?
শুনেছ কী কখনো তারা চাপিয়েছে দোষারোপ ?
শুনেছ কি কখনো তারা পেতেছে হাত ?
মানুষ বড় অসহায় !
প্রশ্ন
তোমাকে প্রশ্ন করতে চাই তোমাকেই ..
তোমার লেখনীর ধারগুলোতে মরচে ধরেছে আজ..
শান যে দেবে সে আজকাল আর নজর দেয় না..
পুরোনো ইতিহাসে যে কটা যুগ এসে
থমকে দাঁড়িয়েছে
শুধু তাদের নজর এড়াতে পারেনি ..
আসন্ন সংকটকালে নিজেরা নিজেদের প্রয়োজনে
ব্যস্তমুখী বাস্তবকে অবজ্ঞা করার অভ্যেসে
ক্ষীণ ইচ্ছাগুলো অবদমিত হতে হতে একটা শূন্যতা হাতে অবশিষ্ট |
বিশ্ব লয়ে খেলার মানসিকতায় আজ শুধুই মন্ত্রণা !
প্রনব রুদ্র র কবিতাগুচ্ছ
০১। ভালোবাসা
শেকল মানে বন্ধন নয়
বন্ধন হলে ভালোবাসা
ভালোবাসা শেকল নয়
শেকল ভাঙ্গার আশা।
০২। জীবন
একটা ঘোরের মধ্যে আছি
ঘোরটা মৃত্যুর মতো সত্য।
০৩। সুখ
সুখ জীবন পথে বৃদ্ধ সারি সারি বৃক্ষ
সুখ বয়সের ভারে নুয়ে পড়া একাধিক দুঃখ।
০৪। গুরু পাক
লাল গেরুয়া সবুজ সাদা
এসব শুধু রঙ মাত্র
একের সাথে অন্য মিশে
পাল্টাচ্ছে চিত্রনাট্য।
অন্যায়
হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়
তোমাকে দেখেছি কাল,তাতেই দুচোখ অন্ধ হয়ে গেছে, ফের সম্ভাবনা নড়ে চড়ে ওঠে
আকাঙ্খার ধাপগুলি স্বর্গে উঠে গেছে
অন্যায় চোখের নয়,জানি তবু এভাবে ডাক দিতে আছে ?
চারিদিকে লালধুলো ঝরাপাতা কৃষ্ণচূড়া
না তাকিয়ে তার কোনো উপায় ছিল না
তবু কুড়িয়ে ছড়িয়ে দিলে তাস
ছেড়ে দিয়ে চলে গেলে মাঝপথে ক্রীড়া
যেভাবে নদীর দুটি মুখ বয়ে যায়
যেভাবে আসঙ্গ লিপ্সায় দুটি ঠোঁট জেগে থাকে একা,তখন থেকেও নেই না থেকেও থাকা
শুধু দিনগত ক্ষয়
এ অন্যায় চোখের নয়, সংবরণ করার কোনো উপায় ছিল না
সত্যিই ছিল না ?
এক অন্ধ আরেক অন্ধের কাছে গিয়ে বলে
সত্যিই ছিল না, না ?
বিষাদ
নির্মাল্য কুমার পান্ডে
শ্রাবণের বিকেল, আকাশ হতে ঝরছে না ঝর্না,
নড়ছে না গাছের পাতা,
ঘন মেঘের প্রেম গিয়েছে ভুলে এপথের যাত্রা
দিচ্ছে অজান্তে বিষাদের বার্তা।
কূজন হীণ কাননভূমি
আছে বসে দুয়ার খুলি,
বিষাদ মুখর শ্রাবণের শেষে
আছি বসি গোমড়া মুখে।
কলকাতার ইঁট-কংক্রিটের মাঝে,
খাতা হাতে বাতায়ন পাশে।
আসছে না কবিতার কলি
নড়চ্ছে না মনের অলিগলি।
সবি যেন যাচ্ছে উড়ে শ্রাবণের মেঘের সাথে
দিগভ্রান্ত পথিকের মত বিষাদমনে আছি বসে
আমার প্রিয় আসনে।
ভাবচ্ছি! কি লিখি, এই দূষণের পৃথিবীতে!
অবদ্ধ
প্রদ্যুৎ দাস
বড়শিগেঁথে ছোঁ মেরে তুলে নিতে চাও?
চতুরতা ছলনায়-
তবে বলো অাকাশ কেমনে ধরা দেবে? সে তো অসীম;
মনের অনুভূতিগুলি কি টোপ খায়?
সে যেতে চায় শুধু মুক্তির সন্ধানে-
তবে কেন তারে বাঁধিবার চাও?
সূর্যের অালোর গুণগুণ,স্বাদ
দেবে কি ধরা মোমের শিখায়?
পূর্ণিমা চাঁদের অামোদও হাসিবে তবে লজ্জায়-
যাহা স্বভাবসিদ্ধ তা তো নিজের খেয়ালে চলে-
বাজে সুর মনোবীণায়-
পদার্থের ধর্মের নিয়মে, সে তো ধীবরের বস নয়।
ও মেয়ে
রাজশ্রী সেন
ও মেয়ে,
তোর জন্মলগ্নেই সাদা ক্যানভাস,
তুলিতে কোনো রঙ নেই।
বিধাতা গড়েছে মেয়ের ছাঁচে তাই,
শোকার্তের বেরঙ সাজিয়েছে তোকে
মৃত সংস্করণের প্রচ্ছায়ায়।
ও মেয়ে,
তোর চোখে এঁকেছে শৈশবের কাজলে,
ধূসর কালিতে স্বপ্ন ভঙ্গের কবিতা।
বিষাদী শব্দ কুড়িয়ে জড়ো করে
তোর আঁচলে দিয়েছে আঁজলা ভরে।
ও মেয়ে,
তুই চুপ কর্ ,জোরে কথা বলিস না ,
অনসনে বসবে অজ্ঞাত সমাজ
নৈঃশব্দ হত্যার মীমাংসায়।
ও মেয়ে,
তুই হেঁটে চল্ ,শব্দ যেন করিস না,
কারণে অকারণে সমাজবাদীরা
তোর অক্ষর বিহীন সাদা পাতায় জুড়ে দেবে
নগ্ন বিজ্ঞাপনের সস্তা অ্যালবাম।
ও মেয়ে,
তোর পালা বদলের ইতিহাসে
চাঁদের জোছনাকে ছুঁতে চাওয়া,
পুরুষের সাথে কাঁধ মিলিয়ে
উত্তাল সমুদ্রের অতলে ডুব দেওয়া।
বিপন্ন শিশিরে ভেজা ঘাসের স্তুপে
পড়ে থাকবে তোর ক্ষুধা মেটানো নিস্তেজ শরীর।
মুখ চাওয়া চাওয়ি করে বলবে সমাজ ,
এ তো দারিদ্র্যের ঘরে দেহপণ্যের বেসাতি।
ও মেয়ে,
তোর আর্তনাদে গড়বে খবর সংবাদ শিরোনামে,
রাজনীতি হবে মুখরোচক
অজ্ঞাত ফাঁসের ভাবনায়।
তোর ইচ্ছের আকাশে মেঘ থমথমে,
জীবন বেওয়ারিশ কবিতা,
তোর সাদা রঙ বাদামি হয়েছে,
ঝরে পড়ার সুবাদে।
পায়ের তলায় পিষে যাবি তুই,
আবেগ গুলো নিশ্চুপ স্যান্ডউইচ।
ও মেয়ে,
তোর ক্লান্তির কোলাহলে মৃত্যুর স্হবিরতা,
পরাজিত শ্বাসের অক্ষরে অক্ষরে নিষ্ফলা সংলাপ।
শেষ বাক্যে লেখা হোক্ তোর আকাঙ্খিত কান্না,
পরের বারের নির্মাণেতে পুরুষ ধাঁচের বায়না।।
মৃত্যু ( অনুগল্প )
টুম্পা মুখার্জী
১.শ্মশান যাত্রী অতনু সদ্য মৃত বাবার উদ্দেশ্যে মনে মনে বলে, "খইয়ের উল্লাস মাখা পথে তুমি যাবে আগে আগে আমি তার পিছু..."
২.মৃত্যুর হীম অন্ধকারে জীবনের সূর্য আলো দেখায় আরতিকে, তাই তীব্র জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে গাছের ডালটা আরও জোরে আঁকড়ে ধরে।
৩.উল্লাপাড়ার মাঠের শেয়ালরাও আজ নিশ্চুপ অতিমারী আর ঝড়ের উগ্ৰ তান্ডবে বেঘর হয়ে।
৪.খাবারের টানে রোজ জানালায়
একাধিক বার ছুটে আসা কাকটি, ঝড়ের পর থেকে গরহাজির।
৫. পরিযায়ী শ্রমিকদের রক্ত নোনা সমুদ্র হয়ে ঢেউ তোলে স্মৃতিভ্রংশ জনগণের মনে। রাজাদের বরফ-শীতল নীল রক্তের বিজ্ঞাপন-সুনামিতে সেসব চাপা পড়ে যায়।
লাফ
সোমনাথ বেনিয়া
জানালা থেকে এক লাফ দূরত্বে পুকুর। সেই জানালার পাশে থাকা অ্যাকোরিয়ামের মাছটি ভাবে যদি এক লাফে ওই পুকুরে গিয়ে পড়া যায় তাহলে এই ক্ষুদ্র জলাশয়ে নিঃসঙ্গতার বদ্ধদশা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু সে পারে না কারণ তার থেকে এক লাফ দূরত্বে বাড়ির পোষা বিড়ালটি তার দিকে মুখ তাক করে বসে থাকে। বিড়াল ভাবে ওই মাছটি যদি কোনো কারণে একবার লাফিয়ে ওঠে, তাহলে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক ঝটকায় তাকে উদরস্ত করবে। কিন্তু পারে না কারণ তার পিছনে এক লাফ দূরত্বে বাড়ির পোষা কুকুরটি থাবা উঁচিয়ে বসে থাকে। বিড়ালটির প্রতি মালিকের বেশি আদরজনিত কারণে কুকুরটির মধ্যে একটি ঈর্ষার বাতাবরণ তৈরি হয়ে আছে। তাই সে ভাবে বিড়ালটি যদি কিছুমাত্র বাড়াবাড়ি করে তাহলে এক লাফে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ঘাড় মটকাবে। কিন্তু পারে না কারণ সেই বাড়ির বৃদ্ধ মালিক তার পিছনে এক লাফ দূরত্বে চেয়ারে বসে থাকে হাতে লাঠি নিয়ে। সেই মালিকের ইচ্ছে আর একবার কুকুরটি যদি ট্যানডাই-ব্যানডাই করে তাহলে তার পাছায় এক ঘা লাঠির আঘাত দিয়ে তাকে শিক্ষা দেবে কারণ কুকুরটি তার অনেকগুলি শখের জিনিস লম্ফঝম্ফ করে ভেঙেছে। কিন্তু সে পারবে কিনা এই ব্যাপারে তার নিজেরই সংশয় আছে কারণ তার হাঁটুতে অসম্ভব রকমের বাতের ব্যথা। তবুও যাই হোক না কেন, ঘটনা হলো এই যে এদের প্রত্যেকের একটি ইচ্ছে আছে তা আপাতত অপূর্ণ থেকে যাবেই বলে মনে হচ্ছে ওই সামান্য একটি লাফের জন্য ...
পৃথা চট্টোপাধ্যায়
দক্ষিণী হাওয়ার আরণ্যক মুহূর্তে
ভালোবাসার পরিযায়ী পথচলা
চিলেকোঠার জমে থাকা খড়কুটোয়
চড়াই এর ঘরবাড়ি
এই একান্ত অবসরের সঙ্গী
বাতাসে ভেসে আসা মৌরীফুলের গন্ধে
মনে পড়ে
তোমার ইচ্ছামন্ত্রে ধরা পড়া দিনগুলো
এখন সেসব সুদৃশ্য ফ্লাওয়ার-ভাসে বন্দী
কোনো নান্দনিক ছন্দের বাঁধনে
আজ সব মিথোজীবী অভ্যাস
দুরন্ত ইচ্ছারা লুকিয়ে থাকে চানঘরের গানে
আস্পর্ধা
অনিন্দ্যকেতন গোস্বামী
তখনও আকাশে মেঘ জমেনি-
তখনও পথে পথে লেখা হয়নি মানুষেরাও পরিযায়ী হতে পারে-
তখনও তাচ্ছিল্যের করোনা সন্ত্রাসের পথে নেমে আসেনি-
তখনও বন্ধুকে বন্ধু ডেকে সোফার উপরে বসায়-
তখনও ইতিহাস পড়ে লোকে রাজা-যুদ্ধ-সন্ধির অলিগলি-
তখনও ভূগোল পড়ে লোকে, সমুদ্রে আগ্নেয়গিরি।
নতুন দ্বীপের জন্ম-
তখনও সিসিলি দুঃখ চুষে নিচ্ছে দিগ্বিজয়ী নেপোলিয়নের-
তখনও উঠোনের মাটিতে আর্কিমিডিস খেলছেন জটিল অঙ্কের খেলা-
তখনও গুয়াতেমালায় মায়ানরা হেসেখেলে বিস্তার করে নিচ্ছে স্থাপত্য-
তখনও মানুষ ম্যামথের সাথে লড়ে-
তখনও মানুষ তুষার খুঁড়ে নিজের মাথাকে বাঁচিয়ে রাখে-
তখনও মানুষ বন্য-
তখনও মানুষ ন্যাংটো-
তখনও বজ্র-বৃষ্টি এলে মানুষ একশো অসহায়
এখনও তাই...
‘তবু বেঁচে থাকবো’
সীমাহীন আস্পর্ধা।
কবিতাগুচ্ছ-
অমিয় কুমার চৌধুরি
১
ল্যাম্পপোষ্ট
আমি মূর্খ হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত প্রতিবিম্ব হতে পেরেছি,
শরীরে ল্যাম্পপোষ্টের স্বভাব বিরাজ করছে ।
২
নদী
আমি জল হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত কান্না হতে পেরেছি,
শরীরে নদীর স্বভাব বিরাজ করছে।
৩
রামধনু
আমি নেতা হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত অভিনেতা হতে পেরেছি,
শরীরে রামধনু রং বিরাজ করছে।
৪
বিষ
আমি সাপুড়ে হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত ওঝা হতে পেরেছিলাম,
শরীরে বিষের স্বভাব বিরাজ করছে।
৫
কষ্ট
আমি সত্যবাদী হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত ঠোঁটকাটা হতে পেরেছিলাম,
শরীরে কষ্টের স্বভাব বিরাজ করছে।
৬
হিংসা
আমি ভদ্রলোক হতে চেয়েছিলাম
শেষ পর্যন্ত নষ্টলোক হতে পেরেছিলাম,
শরীরে হিংসার স্বভাব বিরাজ করছে।
মৃত্যুরূপা
শ্যামাপ্রসাদ সরকার
তুমিও প্রেয়সী হলে
গর্জমান মেঘ চমকে ওঠে;
নখে দন্তে কি সুতীব্র ঘাত
আশ্লেষে রক্ত ঝরেছে কেবল।
তুমিও শান্ত হলে;
সুষুপ্তির শেষে কুন্ডলী শয্যায়,
জানলার জাফরিতে রোদ আসে;
মুহূর্তে বরফের মত গলে গেলে
আবিশ্ব প্লাবিত হতে পারে।
তুমিও প্রেয়সী হলে
তুচ্ছ রাজ্য রাজধানী
তরবারি হাতের মুঠিতে ধরে
ছিন্ন শির কয়েদীর নিয়ে
মালা গেঁথে পড়েছ গলায় !
মহাকাল নিশ্চুপে দেখে
প্রতিবার ক্ষুধিত রমণ নাচে
অন্ধকারে আবর্ত ঘিরেছে প্রেত
শিবাভোগে কি নির্লিপ্তি তোমার !
হাইকু কবিতা
শ্যামল অধিকারী
১.মেথর পাড়া
মেথরের সভ্যতা
জঞ্জাল সাফে
২.মেথর নোংরা
বলে বাবু ভায়ারা
নোংরা বাবুরা
৩.মেথর চাঁদ
চাঁদ হয়ে ফুটপাতে
দেশ গড়ছে
৪.পথে মেথর
সাফাই অভিযান
দেশের স্বার্থে
৫.মেথর তুমি
দেশ গড়ার সৈন্য
সমাজ স্বপ্নে
৬.বিশ্ব নির্নয়ে
দেশ জঞ্জাল মুক্ত
মেথর ধন্য
কালবৈশাখী
নন্দিতা মিশ্র
কালবৈশাখী হয়ে গেল।
মুছে গেল প্রকৃতির যত মলিনতা।
সজীবতায় প্রাণবন্ত প্রকৃতির ঔজ্জ্বল্য তাই ঠিকরে পড়ছে।
প্রতিটি সম্পর্কে একটা কালবৈশাখী দরকার।
ঘুণধরা যে ভুল গুলো আছে,
যে বিদ্বেষ,
যে ক্লান্তি,
একঘেয়েমি....
তা দূর হয়ে গিয়ে
ফিরে আসুক ঔজ্জ্বল্য।
ফিরে আসুক তারুণ্য।।
একটা কালবৈশাখী খুব দরকার
প্রকৃতির ন্যায় জীবনেও।।
পরিযায়ী শ্রমিক
বিশ্বজিত মুখার্জ্জী
পথশ্রান্ত,শরীরক্লান্ত,অসাড় ঘুমের ঘোর,
ওদের জীবনে ছিলনা প্রভাত,শেষ ঘুমেতেই ভোর।
শ্রমিক তুমি ঘুমিয়ে ছিলে,রেললাইনের পরে,
কালও তোমার ছিলনা জানা,এমনি যাবে মরে।
হায়রে আমার রাজা,তোর এমনি উন্নয়ন,
ওদের বুঝি জীবন নই,শুধুই অবমূল্যায়ন!
মালিক,তুমি উদারতায়,দেখাতে একটু মায়া,
পরমশান্তিতে থাকত ওরা,পেলে স্নেহের ছায়া।
না হয় একটু উচ্ছিষ্ট,পরত ওদের পাতে,
রাত্রিটা কাটিয়ে নিত,ঘুমিয়ে ফুটপাথে।
ওরাতো আর 'মানুষ না',তৃতীয় নাগরিক,
সামান্য মুনাফা খরচ হোত,মালিক শত ধ্বিক।
ওতোগুলো তাজা প্রাণ,অকালে গেল ঝড়ে,
চুরিরশ্রমে মালিক চড়ে ,উদবিত্তের পাহাড়ে।
ঝড়
রীতা রায়
ঝড় এসেছিল..ঝড় তো আসবেই ..
সে তো নিয়মের দাস ..
শুনেছ কী কখনো পিপীলিকার কান্না ?
শুনেছ কী কখনো তারা চাপিয়েছে দোষারোপ ?
শুনেছ কি কখনো তারা পেতেছে হাত ?
মানুষ বড় অসহায় !
প্রশ্ন
তোমাকে প্রশ্ন করতে চাই তোমাকেই ..
তোমার লেখনীর ধারগুলোতে মরচে ধরেছে আজ..
শান যে দেবে সে আজকাল আর নজর দেয় না..
পুরোনো ইতিহাসে যে কটা যুগ এসে
থমকে দাঁড়িয়েছে
শুধু তাদের নজর এড়াতে পারেনি ..
আসন্ন সংকটকালে নিজেরা নিজেদের প্রয়োজনে
ব্যস্তমুখী বাস্তবকে অবজ্ঞা করার অভ্যেসে
ক্ষীণ ইচ্ছাগুলো অবদমিত হতে হতে একটা শূন্যতা হাতে অবশিষ্ট |
বিশ্ব লয়ে খেলার মানসিকতায় আজ শুধুই মন্ত্রণা !
প্রনব রুদ্র র কবিতাগুচ্ছ
০১। ভালোবাসা
শেকল মানে বন্ধন নয়
বন্ধন হলে ভালোবাসা
ভালোবাসা শেকল নয়
শেকল ভাঙ্গার আশা।
০২। জীবন
একটা ঘোরের মধ্যে আছি
ঘোরটা মৃত্যুর মতো সত্য।
০৩। সুখ
সুখ জীবন পথে বৃদ্ধ সারি সারি বৃক্ষ
সুখ বয়সের ভারে নুয়ে পড়া একাধিক দুঃখ।
০৪। গুরু পাক
লাল গেরুয়া সবুজ সাদা
এসব শুধু রঙ মাত্র
একের সাথে অন্য মিশে
পাল্টাচ্ছে চিত্রনাট্য।
অন্যায়
হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়
তোমাকে দেখেছি কাল,তাতেই দুচোখ অন্ধ হয়ে গেছে, ফের সম্ভাবনা নড়ে চড়ে ওঠে
আকাঙ্খার ধাপগুলি স্বর্গে উঠে গেছে
অন্যায় চোখের নয়,জানি তবু এভাবে ডাক দিতে আছে ?
চারিদিকে লালধুলো ঝরাপাতা কৃষ্ণচূড়া
না তাকিয়ে তার কোনো উপায় ছিল না
তবু কুড়িয়ে ছড়িয়ে দিলে তাস
ছেড়ে দিয়ে চলে গেলে মাঝপথে ক্রীড়া
যেভাবে নদীর দুটি মুখ বয়ে যায়
যেভাবে আসঙ্গ লিপ্সায় দুটি ঠোঁট জেগে থাকে একা,তখন থেকেও নেই না থেকেও থাকা
শুধু দিনগত ক্ষয়
এ অন্যায় চোখের নয়, সংবরণ করার কোনো উপায় ছিল না
সত্যিই ছিল না ?
এক অন্ধ আরেক অন্ধের কাছে গিয়ে বলে
সত্যিই ছিল না, না ?
বিষাদ
নির্মাল্য কুমার পান্ডে
শ্রাবণের বিকেল, আকাশ হতে ঝরছে না ঝর্না,
নড়ছে না গাছের পাতা,
ঘন মেঘের প্রেম গিয়েছে ভুলে এপথের যাত্রা
দিচ্ছে অজান্তে বিষাদের বার্তা।
কূজন হীণ কাননভূমি
আছে বসে দুয়ার খুলি,
বিষাদ মুখর শ্রাবণের শেষে
আছি বসি গোমড়া মুখে।
কলকাতার ইঁট-কংক্রিটের মাঝে,
খাতা হাতে বাতায়ন পাশে।
আসছে না কবিতার কলি
নড়চ্ছে না মনের অলিগলি।
সবি যেন যাচ্ছে উড়ে শ্রাবণের মেঘের সাথে
দিগভ্রান্ত পথিকের মত বিষাদমনে আছি বসে
আমার প্রিয় আসনে।
ভাবচ্ছি! কি লিখি, এই দূষণের পৃথিবীতে!
অবদ্ধ
প্রদ্যুৎ দাস
বড়শিগেঁথে ছোঁ মেরে তুলে নিতে চাও?
চতুরতা ছলনায়-
তবে বলো অাকাশ কেমনে ধরা দেবে? সে তো অসীম;
মনের অনুভূতিগুলি কি টোপ খায়?
সে যেতে চায় শুধু মুক্তির সন্ধানে-
তবে কেন তারে বাঁধিবার চাও?
সূর্যের অালোর গুণগুণ,স্বাদ
দেবে কি ধরা মোমের শিখায়?
পূর্ণিমা চাঁদের অামোদও হাসিবে তবে লজ্জায়-
যাহা স্বভাবসিদ্ধ তা তো নিজের খেয়ালে চলে-
বাজে সুর মনোবীণায়-
পদার্থের ধর্মের নিয়মে, সে তো ধীবরের বস নয়।
ও মেয়ে
রাজশ্রী সেন
ও মেয়ে,
তোর জন্মলগ্নেই সাদা ক্যানভাস,
তুলিতে কোনো রঙ নেই।
বিধাতা গড়েছে মেয়ের ছাঁচে তাই,
শোকার্তের বেরঙ সাজিয়েছে তোকে
মৃত সংস্করণের প্রচ্ছায়ায়।
ও মেয়ে,
তোর চোখে এঁকেছে শৈশবের কাজলে,
ধূসর কালিতে স্বপ্ন ভঙ্গের কবিতা।
বিষাদী শব্দ কুড়িয়ে জড়ো করে
তোর আঁচলে দিয়েছে আঁজলা ভরে।
ও মেয়ে,
তুই চুপ কর্ ,জোরে কথা বলিস না ,
অনসনে বসবে অজ্ঞাত সমাজ
নৈঃশব্দ হত্যার মীমাংসায়।
ও মেয়ে,
তুই হেঁটে চল্ ,শব্দ যেন করিস না,
কারণে অকারণে সমাজবাদীরা
তোর অক্ষর বিহীন সাদা পাতায় জুড়ে দেবে
নগ্ন বিজ্ঞাপনের সস্তা অ্যালবাম।
ও মেয়ে,
তোর পালা বদলের ইতিহাসে
চাঁদের জোছনাকে ছুঁতে চাওয়া,
পুরুষের সাথে কাঁধ মিলিয়ে
উত্তাল সমুদ্রের অতলে ডুব দেওয়া।
বিপন্ন শিশিরে ভেজা ঘাসের স্তুপে
পড়ে থাকবে তোর ক্ষুধা মেটানো নিস্তেজ শরীর।
মুখ চাওয়া চাওয়ি করে বলবে সমাজ ,
এ তো দারিদ্র্যের ঘরে দেহপণ্যের বেসাতি।
ও মেয়ে,
তোর আর্তনাদে গড়বে খবর সংবাদ শিরোনামে,
রাজনীতি হবে মুখরোচক
অজ্ঞাত ফাঁসের ভাবনায়।
তোর ইচ্ছের আকাশে মেঘ থমথমে,
জীবন বেওয়ারিশ কবিতা,
তোর সাদা রঙ বাদামি হয়েছে,
ঝরে পড়ার সুবাদে।
পায়ের তলায় পিষে যাবি তুই,
আবেগ গুলো নিশ্চুপ স্যান্ডউইচ।
ও মেয়ে,
তোর ক্লান্তির কোলাহলে মৃত্যুর স্হবিরতা,
পরাজিত শ্বাসের অক্ষরে অক্ষরে নিষ্ফলা সংলাপ।
শেষ বাক্যে লেখা হোক্ তোর আকাঙ্খিত কান্না,
পরের বারের নির্মাণেতে পুরুষ ধাঁচের বায়না।।
মৃত্যু ( অনুগল্প )
টুম্পা মুখার্জী
১.শ্মশান যাত্রী অতনু সদ্য মৃত বাবার উদ্দেশ্যে মনে মনে বলে, "খইয়ের উল্লাস মাখা পথে তুমি যাবে আগে আগে আমি তার পিছু..."
২.মৃত্যুর হীম অন্ধকারে জীবনের সূর্য আলো দেখায় আরতিকে, তাই তীব্র জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে গাছের ডালটা আরও জোরে আঁকড়ে ধরে।
৩.উল্লাপাড়ার মাঠের শেয়ালরাও আজ নিশ্চুপ অতিমারী আর ঝড়ের উগ্ৰ তান্ডবে বেঘর হয়ে।
৪.খাবারের টানে রোজ জানালায়
একাধিক বার ছুটে আসা কাকটি, ঝড়ের পর থেকে গরহাজির।
৫. পরিযায়ী শ্রমিকদের রক্ত নোনা সমুদ্র হয়ে ঢেউ তোলে স্মৃতিভ্রংশ জনগণের মনে। রাজাদের বরফ-শীতল নীল রক্তের বিজ্ঞাপন-সুনামিতে সেসব চাপা পড়ে যায়।
লাফ
সোমনাথ বেনিয়া
জানালা থেকে এক লাফ দূরত্বে পুকুর। সেই জানালার পাশে থাকা অ্যাকোরিয়ামের মাছটি ভাবে যদি এক লাফে ওই পুকুরে গিয়ে পড়া যায় তাহলে এই ক্ষুদ্র জলাশয়ে নিঃসঙ্গতার বদ্ধদশা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু সে পারে না কারণ তার থেকে এক লাফ দূরত্বে বাড়ির পোষা বিড়ালটি তার দিকে মুখ তাক করে বসে থাকে। বিড়াল ভাবে ওই মাছটি যদি কোনো কারণে একবার লাফিয়ে ওঠে, তাহলে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক ঝটকায় তাকে উদরস্ত করবে। কিন্তু পারে না কারণ তার পিছনে এক লাফ দূরত্বে বাড়ির পোষা কুকুরটি থাবা উঁচিয়ে বসে থাকে। বিড়ালটির প্রতি মালিকের বেশি আদরজনিত কারণে কুকুরটির মধ্যে একটি ঈর্ষার বাতাবরণ তৈরি হয়ে আছে। তাই সে ভাবে বিড়ালটি যদি কিছুমাত্র বাড়াবাড়ি করে তাহলে এক লাফে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ঘাড় মটকাবে। কিন্তু পারে না কারণ সেই বাড়ির বৃদ্ধ মালিক তার পিছনে এক লাফ দূরত্বে চেয়ারে বসে থাকে হাতে লাঠি নিয়ে। সেই মালিকের ইচ্ছে আর একবার কুকুরটি যদি ট্যানডাই-ব্যানডাই করে তাহলে তার পাছায় এক ঘা লাঠির আঘাত দিয়ে তাকে শিক্ষা দেবে কারণ কুকুরটি তার অনেকগুলি শখের জিনিস লম্ফঝম্ফ করে ভেঙেছে। কিন্তু সে পারবে কিনা এই ব্যাপারে তার নিজেরই সংশয় আছে কারণ তার হাঁটুতে অসম্ভব রকমের বাতের ব্যথা। তবুও যাই হোক না কেন, ঘটনা হলো এই যে এদের প্রত্যেকের একটি ইচ্ছে আছে তা আপাতত অপূর্ণ থেকে যাবেই বলে মনে হচ্ছে ওই সামান্য একটি লাফের জন্য ...
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ আমার "ও মেয়ে"কবিতাটি প্রকাশ করার জন্য 🙏🙏🙏
ReplyDeleteবাহ্ , প্রতিটি লেখায় ভালো লাগলো|ধন্যবাদ!
ReplyDeleteসুন্দর সবগুলিই লেখা।
ReplyDeleteCongratulations for publishing my composed poem DISAD:SRABAN DHARA
ReplyDeleteপ্রত্যেকের লেখা ভালো লাগলো।
ReplyDelete